অনলাইনে খতিয়ান যাচাই

Last Updated On:

অনলাইনে খতিয়ান যাচাই কিভাবে করতে হয় ও খতিয়ানের সকল বিষয় নিয়ে আজ বিস্তারিত আলোচনা করবো। তো চলুন শুরু করা যাক।

খতিয়ান কি? (What is Khatiyan?)

খতিয়ান হলো একটি সরকারি আইনি দলিল যা কোনো নির্দিষ্ট মৌজার (গ্রাম বা এলাকা) অধীনে থাকা জমিগুলোর মালিকানার বিস্তারিত বিবরণ দেয়। এটিতে জমির মালিকের নাম, পিতার নাম/স্বামীর নাম, ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর (NID), জমির দাগ নম্বর (প্লট নম্বর), জমির পরিমাণ (একর, শতাংশ, কাঠা, বিঘা ইত্যাদি), জমির শ্রেণী (যেমন: কৃষি, আবাসিক, বাণিজ্যিক, ভিটি), খাজনার পরিমাণ, পূর্বের মালিকের বিবরণ এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য উল্লেখ থাকে। খতিয়ান জমির মালিকানার একটি শক্তিশালী এবং প্রাথমিক প্রমাণপত্র হিসেবে কাজ করে।

খতিয়ানের ইতিহাস (History of Khatiyan)

খতিয়ানের ধারণা ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনামলে শুরু হয়েছিল, মূলত ভূমি রাজস্ব আদায় এবং মালিকানা নির্ধারণের জন্য। শেরশাহের সময়েও জমির হিসাব রাখার প্রচলন ছিল। সময়ের সাথে সাথে, এই ব্যবস্থাটি বিভিন্ন জরিপ এবং সংশোধনের মাধ্যমে আধুনিক রূপ নিয়েছে।

আরো পড়ুন- দলিল আছে রেকর্ড নাই ll করণীয় কি?

খতিয়ান কত প্রকার? (Types of Khatiyan)

বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জরিপের মাধ্যমে খতিয়ান প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রধানত খতিয়ান কয়েক প্রকার:

  • সিএস (CS) খতিয়ান: ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে (Cadastral Survey) এর মাধ্যমে ১৯৪০ সালে এই খতিয়ান তৈরি করা হয়েছিল। এটি সবচেয়ে পুরনো খতিয়ান।
  • এসএ (SA) খতিয়ান: স্টেট একুইজিশন (State Acquisition) এর অধীনে ১৯৫০ সালে জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির পর এই খতিয়ান তৈরি করা হয়।
  • আরএস (RS) খতিয়ান: রিভিশনাল সার্ভে (Revisional Survey) এর মাধ্যমে তৈরি করা হয়। এটিকেই হালনাগাদ খতিয়ান বলা হয়। আগের খতিয়ানে কোনো ভুল থাকলে বা নতুন কোনো পরিবর্তন হলে এই খতিয়ান তৈরি করা হয়।
  • বিএস (BS) খতিয়ান: বাংলাদেশ সার্ভে (Bangladesh Survey) এর মাধ্যমে তৈরি করা হয়। এটি আধুনিকতম জরিপ। কোথাও কোথাও একে সিটি জরিপও বলা হয়।

এছাড়াও, দিয়ারা খতিয়ান (নদী বা চর এলাকার জমি), নামজারি খতিয়ান (মালিকানা পরিবর্তনের পর), ওয়াকফ খতিয়ান (ওয়াকফ সম্পত্তির জন্য), দেবোত্তর খতিয়ান (দেবতার নামে উৎসর্গীকৃত সম্পত্তির জন্য), ভিপি (Vested Property) খতিয়ান (অর্পিত সম্পত্তি), ইত্যাদিও প্রচলিত।

খতিয়ান কেন প্রয়োজন? (Why is Khatiyan Important?)

খতিয়ান কি? কিভাবে অনলাইনে খতিয়ান যাচাই করবেন?

খতিয়ান নিম্নলিখিত কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ:

  • মালিকানার প্রমাণ: এটি জমির মালিকানার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আইনি প্রমাণ।
  • আইনি প্রক্রিয়া: জমি ক্রয়-বিক্রয়, বন্ধক, বাটোয়ারা, এবং অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়ায় খতিয়ান অপরিহার্য।
  • ঋণ প্রাপ্তি: ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে জমির বিপরীতে ঋণ নিতে খতিয়ান প্রয়োজন।
  • খাজনা পরিশোধ: জমির খাজনা বা ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের জন্য খতিয়ান দরকার।
  • বিরোধ নিষ্পত্তি: জমির মালিকানা সংক্রান্ত কোনো বিরোধ হলে খতিয়ান একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে কাজ করে।
  • উত্তরাধিকার নির্ধারণ: উত্তরাধিকার সূত্রে জমি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে খতিয়ান প্রয়োজন।
  • জমি উন্নয়ন ও ব্যবহারের অনুমতি: কোনো জমিতে কোনো স্থাপনা নির্মাণ বা অন্য কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করতে হলে খতিয়ানের প্রয়োজন হয়।

অনলাইনে খতিয়ান যাচাই

অনলাইনে খতিয়ান যাচাই করার নিয়ম (How to Check Khatiyan Online)

বর্তমানে, ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট এবং মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমেও খতিয়ান দেখা যায়। অনলাইনে খতিয়ান যাচাই করার জন্য কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে:

১. অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ/মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার: অনলাইনে খতিয়ান যাচাই করার জন্য প্রথমে, ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে (www.land.gov.bd) অথবা ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে (www.dlrs.gov.bd) প্রবেশ করুন। এছাড়া সরাসরি খতিয়ান দেখার জন্য rsk.land.gov.bd এই সাইটে প্রবেশ করতে পারেন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের মোবাইল অ্যাপ “Land Services” ব্যবহার করেও খতিয়ান দেখা যায়।

২. বিভাগ, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন: অনলাইনে খতিয়ান যাচাই করার জন্য ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর, আপনার জমি যে বিভাগের অধীনে, সেই বিভাগ নির্বাচন করুন। তারপর জেলা এবং উপজেলা নির্বাচন করুন।

৩. মৌজা নির্বাচন: এরপর আপনার জমির মৌজা নির্বাচন করুন।

৪. খতিয়ান খোঁজার পদ্ধতি নির্বাচন: আপনি চারটি পদ্ধতিতে খতিয়ান খুঁজে নিতে পারেন:

*   খতিয়ান নম্বর দিয়ে
*   দাগ নম্বর দিয়ে
*   মালিকের নাম দিয়ে
*   মালিকের পিতা/স্বামীর নাম দিয়ে

৫. তথ্য প্রদান এবং অনুসন্ধান: আপনার পছন্দের পদ্ধতি নির্বাচন করে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করুন। যেমন, যদি আপনি খতিয়ান নম্বর দিয়ে খুঁজতে চান, তাহলে খতিয়ান নম্বরটি লিখুন।

৬. ক্যাপচা পূরণ: নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য একটি ক্যাপচা পূরণ করতে হতে পারে।

৭. খুঁজুন (Search) অপশন এ ক্লিক: সব তথ্য দেওয়া হয়ে গেলে “খুঁজুন” অপশন এ ক্লিক করুন।

৮. খতিয়ান দেখুন ও ডাউনলোড করুন: যদি আপনার দেওয়া তথ্য সঠিক হয়, তাহলে আপনার কাঙ্ক্ষিত খতিয়ানটি স্ক্রিনে প্রদর্শিত হবে। আপনি এটি ডাউনলোড ও প্রিন্ট করতে পারবেন।

অফলাইনে খতিয়ান পাওয়ার নিয়ম (How to Get Khatiyan Offline)

অনলাইনে খতিয়ান খুঁজে না পেলে বা সার্টিফাইড কপির প্রয়োজন হলে, আপনাকে সংশ্লিষ্ট উপজেলা ভূমি অফিস বা তহসিল অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। সেখানে নির্দিষ্ট ফি পরিশোধ করে এবং আবেদন করে আপনি খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করতে পারবেন।

অনলাইনে খতিয়ান যাচাইঃ কিছু সুবিধা ও অসুবিধা

অনলাইনে খতিয়ান যাচাই এর অনেক সুবিধা রয়েছে, তবে কিছু অসুবিধাও রয়েছে। নিচে এগুলো আলোচনা করা হলো:

সুবিধা

  • ঘরে বসেই খতিয়ান দেখা: এখন খুব সহজেই ঘরে বসেই কম্পিউটারের মাধ্যমে অনলাইনে খতিয়ান যাচাই যায়, যা আগে সম্ভব ছিল না।
  • সময় ও খরচ সাশ্রয়: ভূমি অফিসে গিয়ে খতিয়ান তোলার জন্য অনেক সময় ও খরচ লাগত। অনলাইনে সেই ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • দ্রুত তথ্য পাওয়া: অনলাইনে খুব সহজেই যেকোনো খতিয়ানের তথ্য দ্রুত পাওয়া যায়।
  • মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমে: আগে খতিয়ান তোলার ক্ষেত্রে মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব থাকত, যা এখন কমে গেছে।
  • তথ্যের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি: অনলাইনে তথ্য দেখার সুযোগ থাকায় তথ্যের স্বচ্ছতা বেড়েছে।
  • ২৪/৭ সেবা: অনলাইনের মাধ্যমে যেকোনো সময় খতিয়ানের তথ্য পাওয়া যায়।

অসুবিধা

  • সকল অঞ্চলের তথ্য অনলাইনে নাও থাকতে পারে: এখনো পর্যন্ত সকল অঞ্চলের খতিয়ানের তথ্য অনলাইনে পাওয়া যায় না।
  • ইন্টারনেট সংযোগ এবং ডিভাইস ব্যবহারের দক্ষতা প্রয়োজন: অনলাইন খতিয়ান দেখার জন্য ইন্টারনেট সংযোগ এবং কম্পিউটার ব্যবহারের দক্ষতা থাকতে হবে।
  • অনলাইনে প্রাপ্ত কপি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, আইনি কাজে সার্টিফাইড কপির প্রয়োজন: অনলাইনে যে খতিয়ান পাওয়া যায়, সেটি শুধুমাত্র তথ্য জানার জন্য। কোনো আইনি কাজে ব্যবহারের জন্য সার্টিফাইড কপি প্রয়োজন হবে।
  • সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকতে পারে: অনলাইনে তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে।

নকল খতিয়ান চেনার উপায়ঃ

১. খতিয়ানের ভাষা ও হাতের লেখা: সাধারণত, খতিয়ানের ভাষা সহজ ও স্পষ্ট হয়। জটিল বা অস্পষ্ট হাতের লেখা সন্দেহ তৈরি করতে পারে।

২. সরকারি প্রতীক ও সীল: প্রতিটি খতিয়ানে সরকারের নির্দিষ্ট প্রতীক এবং সীল থাকে। ভালোভাবে লক্ষ্য করুন, এগুলো আসল কিনা।

৩. খতিয়ানের নম্বর: খতিয়ানের একটি নির্দিষ্ট নম্বর থাকে। এই নম্বরটি অনলাইনে ভূমি records-এর সাথে মিলিয়ে দেখুন।

৪. জমির বিবরণ: খতিয়ানে জমির মালিকের নাম, ঠিকানা, জমির পরিমাণ এবং অন্যান্য বিবরণ দেওয়া থাকে। এই তথ্যগুলো সঠিকভাবে যাচাই করুন।

৫. স্থানীয় ব্যক্তির সাহায্য: স্থানীয় ভূমি অফিসের কর্মকর্তা বা অভিজ্ঞ ব্যক্তির সাহায্য নিতে পারেন। তারা খতিয়ানটি আসল কিনা, তা নিশ্চিত করতে পারবেন।

৬. সন্দেহজনক বিষয়: যদি খতিয়ানের কোনো অংশে সন্দেহ হয় বা অস্বাভাবিক মনে হয়, তাহলে সেটি ভালোভাবে যাচাই করুন।

৭. অনলাইন যাচাই: বর্তমানে অনেক রাজ্যের ভূমি records অনলাইনে পাওয়া যায়। আপনার জমির খতিয়ানটি অনলাইনে যাচাই করে দেখতে পারেন।

৮. আইনি পরামর্শ: যদি কোনো খতিয়ান নকল বলে মনে হয়, তাহলে আইনি পরামর্শ নেওয়া উচিত।

এসব বিষয়গুলি মনে রেখে আপনি নকল খতিয়ান চেনার চেষ্টা করতে পারেন।

সাম্প্রতিক পরিবর্তন ও আপডেট (Recent Changes and Updates)

  • সরকার ভূমি ব্যবস্থাপনাকে আরও আধুনিক ও জনবান্ধব করার জন্য কাজ করছে।
  • ডিজিটাল ভূমি রেকর্ড ব্যবস্থাপনা (DLRS) প্রকল্পের মাধ্যমে পুরো দেশের ভূমি রেকর্ড ডিজিটালাইজ করার কাজ চলছে। (http://dlrs.gov.bd/)
  • ই-নামজারি এবং অনলাইন ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের সুবিধা চালু হয়েছে।
  • মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ভূমি সেবা আরও সহজলভ্য হয়েছে। “Land Services” app টি Google Play Store এবং Apple App Store এ পাওয়া যায়।
  • ভূমি অফিসের সেবার মান উন্নয়নে সিটিজেন চার্টার প্রকাশ করা হয়েছে।
  • কল সেন্টারের মাধ্যমে ভূমি সংক্রান্ত তথ্য জানার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে (১৬১২২)।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ)

  • প্রশ্ন: অনলাইনে পাওয়া খতিয়ান কি আইনি কাজে ব্যবহার করা যাবে?

    • উত্তর: না, অনলাইনে পাওয়া খতিয়ান শুধুমাত্র তথ্যের জন্য। আইনি কাজে ব্যবহারের জন্য সার্টিফাইড কপির প্রয়োজন। এই কপির জন্য আপনাকে সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।
  • প্রশ্ন: খতিয়ানে ভুল থাকলে কি করতে হবে?

    • উত্তর: খতিয়ানে ভুল থাকলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা ভূমি অফিস বা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর অফিসে যোগাযোগ করে তা সংশোধনের জন্য আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (যেমন: মূল দলিল, পূর্বের খতিয়ান, পরিচয়পত্র) জমা দিতে হতে পারে।
  • প্রশ্ন: নামজারি কি?

    • উত্তর: নামজারি হলো জমির মালিকানা পরিবর্তনের প্রক্রিয়া। কোনো কারণে জমির মালিকানা পরিবর্তন হলে (যেমন: ক্রয়, উত্তরাধিকার, দান, নিলাম) নতুন মালিকের নামে খতিয়ান অন্তর্ভুক্ত করাকে নামজারি বলে। নামজারির জন্য এখন অনলাইনেও আবেদন করা যায় (e-নামজারি)।
  • প্রশ্ন: পর্চা কি?

    • উত্তর: পর্চা হলো খতিয়ানের একটি অনুলিপি বা সার্টিফাইড কপি যা সাধারণত খসড়া খতিয়ান প্রকাশের পর ভূমি মালিকদের দেওয়া হয়। এটি মালিকানার প্রমাণ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
  • প্রশ্ন: দাগ নম্বর কি?

    • উত্তর: দাগ নম্বর হলো মৌজা ম্যাপে চিহ্নিত জমির প্রতিটি প্লটের পরিচিতি নম্বর। এই নম্বর দিয়ে খুব সহজেই ম্যাপে নির্দিষ্ট জমি খুঁজে পাওয়া যায়।
  • প্রশ্ন: মৌজা কি?

    • উত্তর: মৌজা হলো একটি নির্দিষ্ট এলাকার ভৌগোলিক একক, যা সাধারণত একটি গ্রাম বা তার অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত। প্রতিটি মৌজার একটি নির্দিষ্ট নাম ও জে.এল. (Jurisdiction List) নম্বর থাকে।
  • প্রশ্ন: সিএস, এসএ, আরএস এবং বিএস খতিয়ানের মধ্যে পার্থক্য কি?

    • উত্তর: এগুলি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জরিপের মাধ্যমে তৈরি করা খতিয়ান। সিএস (CS) সবচেয়ে পুরনো (১৯৪০), এরপর এসএ (SA) (১৯৫০), তারপর আরএস (RS) (হালনাগাদ) এবং সবশেষে বিএস (BS) (আধুনিকতম) জরিপ। সময়ের সাথে সাথে জমির পরিমাপে বা মালিকানায় পরিবর্তন আসলে নতুন জরিপ করা হয়।
  • প্রশ্ন: খতিয়ান দেখতে কি কোনো ফি লাগে?

    • উত্তর: অনলাইনে খতিয়ান দেখার জন্য কোনো ফি লাগে না। তবে, সার্টিফাইড কপির জন্য সরকারি ফি প্রযোজ্য।
  • প্রশ্ন: আমি কিভাবে বুঝবো কোন খতিয়ানটি আমার জমির জন্য প্রযোজ্য?

    • উত্তর: আপনার জমির এলাকার সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী যে খতিয়ান তৈরি হয়েছে, সেটিই প্রযোজ্য। সাধারণত, আরএস বা বিএস খতিয়ান বর্তমানে বেশি প্রচলিত। আপনি ভূমি অফিস থেকে এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেন।
  • প্রশ্ন: জমির খাজনা বা ভূমি উন্নয়ন কর কিভাবে পরিশোধ করতে হয়?

    • উত্তর: বর্তমানে অনলাইনেও ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করা যায়। এছাড়াও, ইউনিয়ন ভূমি অফিস বা নির্ধারিত ব্যাংকে গিয়েও খাজনা পরিশোধ করা যায়।
  • প্রশ্ন: খতিয়ান এবং দলিলের মধ্যে পার্থক্য কি?

    • উত্তর: খতিয়ান হলো জমির মালিকানার সরকারি রেকর্ড, যা সরকার কর্তৃক তৈরি ও সংরক্ষিত। অন্যদিকে, দলিল হলো দুটি পক্ষের মধ্যে জমি ক্রয়-বিক্রয় বা হস্তান্তরের একটি চুক্তিপত্র। দলিল মালিকানা হস্তান্তরের প্রমাণ, কিন্তু খতিয়ান হলো সরকারের রেকর্ডে মালিকানার চূড়ান্ত প্রমাণ।
  • প্রশ্ন: একাধিক মালিকের ক্ষেত্রে খতিয়ান কিভাবে তৈরি হয়?

    • উত্তর: একাধিক মালিকের ক্ষেত্রে, খতিয়ানে সকল মালিকের নাম, ঠিকানা এবং জমির অংশে তাদের অধিকারের পরিমাণ উল্লেখ করা হয়। এটিকে যৌথ মালিকানার খতিয়ান বলা হয়।

উপসংহারঃ

খতিয়ান জমির মালিকানার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য আইনি দলিল। এটি কেবল মালিকানার প্রমাণ হিসেবেই কাজ করে না, বরং জমি সংক্রান্ত বিভিন্ন আইনি প্রক্রিয়া, যেমন – ক্রয়-বিক্রয়, বন্ধক, বাটোয়ারা, ঋণ গ্রহণ, খাজনা পরিশোধ এবং বিরোধ নিষ্পত্তিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ডিজিটাল বাংলাদেশের যুগে, সরকার ভূমি ব্যবস্থাপনাকে আরও আধুনিক ও জনবান্ধব করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অনলাইনে খতিয়ান যাচাইয়ের সুবিধা, ই-নামজারি, অনলাইন ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ এবং মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ভূমি সেবা প্রাপ্তি—এ সবই ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

Tags

You might Also Enjoy.....

অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম

অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম (How to Buy Train Tickets Online)

Read More

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই

Read More
গর্ভবতী ভাতা

গর্ভবতী ভাতা: মাতৃত্বকালীন আর্থিক সহায়তার অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া

Read More

Leave a Comment

Join Us

Recommended Posts

অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম

অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম (How to Buy Train Tickets Online)

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই

গর্ভবতী ভাতা

গর্ভবতী ভাতা: মাতৃত্বকালীন আর্থিক সহায়তার অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া

জন্ম নিবন্ধন করার নিয়ম

জন্ম নিবন্ধন করার নিয়ম: একটি সম্পূর্ণ গাইড

জমির মৌজা ম্যাপ

জমির মৌজা ম্যাপ: কিভাবে খুঁজে বের করবেন ও ডাউনলোড করবেন?

কিমি

কিমি Kimi: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নতুন দিগন্ত

জমির স্ট্যাম্প লেখার নিয়ম

জমির স্ট্যাম্প লেখার নিয়ম: সম্পূর্ণ গাইডলাইন

About this site

সাইটটি মূলত টেকনোলজি রিলেটেড। নিত্য নতুন টেকনোলজি সম্পর্কে এখানে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। 

 

 

 

 

 

Top Rated Posts

প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন

প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন

জমির খাজনা চেক

জমির খাজনা চেক

পড়া মনে রাখার উপায়

পড়া মনে রাখার উপায়

জমির মালিকানা বের করার উপায়

জমির মালিকানা বের করার ‍উপায়

Recommended Posts

গুগল বার্ড কি?

গুগল বার্ড কি? গুগল বার্ড এর আদ্যোপান্ত।

ডিপফেক প্রযুক্তি

ডিপফেক প্রযুক্তি: সেরা ১২ টি ডিপফেক অ্যাপস। 

ডিপ ওয়েব

ডিপ ওয়েব: ডার্ক ওয়েব বনাম ডিপ ওয়েব।

ডেভিন

ডেভিন : প্রযুক্তির নতুন বিস্ময়।